এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একব্যক্তিকেন্দ্রীক কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থাকে সুসংহত করার গণবিরোধী প্রকল্পসমূহকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে আওয়ামীলীগ সরকার ছাত্রলীগ-পুলিশ-র্যাব-বিজিবিকে দিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর স্থানীয় পর্যায়ে যেসব বলপ্রয়োগের ঘটনা ও হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তার প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আন্দোলনকারীদের সাথে আরো (সু)দৃঢ়ভাবে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
মনে রাখা জরুরি, আঘাত যারা করেছে এবং করিয়েছে তারা কিন্তু সহিংসতা উৎপাদনের কোনো পদ্ধতিই বাকি রাখে নাই এক্ষেত্রে। ব্যক্তি পর্যায়ের হাসি-ঠাট্টা-বিদ্রুপ থেকে শুরু করে মিডিয়াবাজি, গুজবতত্ত্ব, একাডেমিক-ননএকাডেমিক বুদ্ধিবৃত্তিক কড়িবর্গাদের দিয়ে তত্ত্বায়নের নানা বয়ান-বিশ্লেষণের পাশাপাশি কিভাবে সর্বাত্মক সহিংস একইসাথে (আপাত) অহিংস স্বৈরতন্ত্রী কলকব্জাগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার তারা করেছে, তাও আমরা দেখেছি।
শুরু থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের এই ন্যায্য আন্দোলনকে; আমাদের যৌক্তিক প্রতিবাদ-প্রতিরোধকে সিস্টেমেটিক্যালি আঘাত করা হয়েছে, সংবদ্ধভাবে। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে দগদগে ঘা তৈরি করা হয়েছে একের পর এক; আন্দোলনকারীদের সহজাত প্রতিক্রিয়ার পর আরো দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে দমন করার চেষ্টা করেছে (এবং এখনো করে যাচ্ছে) এই ফ্যাসিস্ট সরকার। কথাবার্তায়, আচার-আচরণে নূন্যতম সহনশীলতা-সংবেদনশীলতা দেখানো তো দূরের কথা; বরঞ্চ পুরো আন্দোলনে একজন সাইকোপ্যাথের ধ্বংসাত্বক ভূমিকায় দেখা গেছে তথাকথিত ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’কে।
বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে ‘মাননীয়’র এই অমোচনীয় ভূমিকাকে এদেশের ভবিষ্যতের জনগণ অবশ্যই ঘৃণা সহযোগে স্বরণ করবে। কেননা, ‘ক্ষমতার বিরুদ্ধে (গণ)মানুষের লড়াই মূলত বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই’।
মিলান কুন্ডেরার এই কথা স্থান-কাল নির্বিশেষে নিপীড়িত-নিষ্পেষিত জনগণের অধিকারের লড়াইয়ের প্রশ্নে পৃথিবীর সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সত্য।